দৌলতপুর ইউনিয়নের প্রধান খাদ্য শষ্য উদপাদননের মধ্যে অন্যতম হল আলু।
আন্দাস অঞ্চলের কাছাকাছি এর কিছু সংখ্যক প্রজাতি দেখা যায়। এটি সর্বপ্রথম ৪০০ বছর পূর্বে আন্দাস পর্বতে দেখা যায় যা পরবর্তীতে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ধান, গম এবং ভুট্টার পর এটি চতুর্থ বৃহত্তম ফসল। বন্য আলুগুলো মূলত সমগ্র আমেরিকাতে দেখা যেত বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উরুগুয়ে পর্যন্ত। এর উৎপত্তি হিসেবে বিভিন্ন অঞ্চলের নাম উল্লেখ করা হলেও সম্প্রতি একটি গবেষণায় প্রমাণ করে আলুর উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ পেরু যা ৭০০০-১০০০০ বছরের পুরনো Solanum brevicaule complex প্রজাতির আলু দ্বারা প্রমাণিত হয়। ষোড়শ শতাব্দীতে স্প্যানিশেরা ইউরোপে আলু পাচার করে, পরবর্তীতে ইউরোপীয় নাবিক দ্বারা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৪৫ সালে যদিও oomycete Phytophthora infestans, ছত্রাক দ্বারা আলুর লেট ব্লাইট রোগ দেখা যায় যা পশ্চিম আয়ারল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ে, তারপরও আলুর উৎপাদন থেমে থাকে নি । বর্তমানে সমগ্র বিশ্বের প্রতিটি মানুষ বছরে ৩৩ কে.জি আলু ভক্ষণ করে থাকে এবং এককভাবে চীন এবং ভারত সর্বাধিক আলু উৎপাদন করে থাকে। তবে বিশ্বের সমগ্র অঞ্চলে কম বেশি আলু জন্মে।
আলু বহুল প্রচলিত উদ্ভিজ্জ খাদ্য। এটি কন্দজাতীয় (tuber) এক প্রকারের সবজি, যা মাটির নিচে জন্মে। এর আদি উৎস দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ, সেখান থেকে ১৬শ শতকে এটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। উচ্চ পুষ্টিমান এবং সহজে ফলানো ও সংরক্ষণ করা যায় বলে এটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রচলিত সবজিগুলো মধ্যে অন্যতম।
বন্য আলুর প্রজাতি উত্তরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দক্ষিণে উরুগুয়ে এবং চিলিতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন চাষ করা এবং বন্য প্রজাতির (Genetic) পরীক্ষা ইঙ্গিত করে যে, আলুর উত্পত্তি দক্ষিণ পেরু অঞ্চলে, Solanum brevicaule-এর একটি প্রজাতি থেকে।
আলু একটি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার। আলু'র বৈজ্ঞানিক নাম Solanum tuberosum। এতে একদিকে যেমনি ভাতের মতো শর্করা আছে তেমনি সবজির মতো খাবার আঁশ, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন আছে। প্রতি ১০০ গ্রাম আলুতে শর্করা আছে ১৯ গ্রাম, খাবার আঁশ ২.২ গ্রাম, উদ্ভিদ প্রোটিন ২ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.৫২ গ্রাম যার মধ্যে পটাশিয়াম লবণই ০.৪২ গ্রাম, এবং ভিটামিন ০.০২ গ্রাম। অপরদিকে ১০০ গ্রাম চালে ৮০ গ্রাম শর্করা, খাবার আঁশ ১.৩ গ্রাম, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ৭.১৩ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.২৮ গ্রাম এবং ভিটামিন আছে মাত্র ০.০০২ গ্রাম। তাই আলুর মধ্যে ভাতের তুলনায় শর্করা কম থাকলেও অন্যান্য উপাদান বেশি আছে। প্রয়োজনীয় খাদ্যপ্রাণ বেশি থাকায় এটি একটি সুষম খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
সূচিপত্র[আড়ালে রাখো] |
জাতিসংঘ এফএও-এর রিপোর্ট মতে সারা পৃথিবীতে আলু উৎপাদন ২০০৮ সালে ছিল ৩১৪ মিলিয়ন টন। একজন ব্যক্তি প্রতিবছর প্রায় ৩৩ কেজি আলু খায়।
দেশ | মিলিয়ন মেট্রিকটন |
---|---|
গণচীন | ৭০ |
রাশিয়া | ৩৯ |
ভারত | ২৪ |
যুক্তরাষ্ট্র | ২০ |
ইউক্রেন | ১৯ |
জার্মানি | ১০ |
পোল্যান্ড | ৯ |
বেলজিয়াম | ৮ |
নেদারল্যান্ড | ৭ |
ফ্রান্স | ৬ |
পুরো দুনিয়া | ৩১৫ |
আলু একটি বহুবর্ষজীবী টিউবেরাস ফসল যা সোলানেসিয়া গোত্রের অন্তর্গত। আসলে এর খাওয়ার উপযোগী টিউবারের কারনেই এটির আলু নামকরণ। আলুর ইংরেজি শব্দ পটেটো এসেছে স্প্যানিশ পেটাটা থেকে। স্প্যানিশ রয়েল একাডেমির তথ্য অনুযায়ী এটি টাইনো (মিষ্টি আলু) এবং কুয়েছু পেপা (আলু) । আলু বলতে মুলত সাধারণ আলু অপেক্ষা মিষ্টি আলুকে বোঝানো হয়, যদিও এই দুই ধরনের আলুর মাঝে কোন মিল নেই। এটি নিয়ে ইংরেজরাও দ্বিধাদন্দে আছে। ষোড়শ শতাব্দীতে ইংরেজ উদ্ভিদবিদ জন গেরারড “বাস্টার্ড পটেটো” এবং “ভার্জিনিয়া পটেটো” নামক দুইটি টার্ম ব্যবহার করেন এবং মিষ্টি আলুকে সাধারণ আলু হিসেবে নামকরণ করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস